সিসিএন ডেস্ক : ইএসজিবিজনেস অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩-এ ‘রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাডপশন অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। সম্প্রতি, ফ্রেন্ডশিপ-এর সহযোগিতায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ‘সোলার ভিলেজ প্রজেক্ট’-এর আওতায় কুড়িগ্রাম জেলার ঘুঘুমারী চরের ৭৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান করেছে। এসব চর বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নত করতে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ইএসজিবিজনেস অ্যাওয়ার্ডস কমিটি ব্যাংককে এই অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে।
চরাঞ্চলে ৫৪-কিলোওয়াট সোলার মাইক্রো-গ্রিড এবং ৬০টি নলকূপ স্থাপনে অবকাঠামোগত উন্নয়নই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও ফ্রেন্ডশিপ-এর এই যৌথ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া, জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় প্রকল্পের আওতায় ১,৩৫০টি চারাগাছ রোপন করা হয়েছে। দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সম্পদ ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিতের মাধ্যমে ব্যাংক প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই সমাজব্যবস্থা গঠনে সাহায্য করছে। বিভিন্ন অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর টেকসই জীবনমান বৃদ্ধির মাধ্যমে ২০২৩ সালে ইএসজি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছে ব্যাংক। ভবিষ্যতেও এইসকল উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং, বিটোপি দাস চৌধুরী বলেন, “মূল ভূখণ্ড থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং জাতীয় গ্রিড থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েও কীভাবে নির্ভরযোগ্য পুনঃনবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ইতিবাচক রূপান্তর ঘটাতে পারে, তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হলো ঘুঘুমারী। ২০২৩ সালে এলাকাটি পরিদর্শনকালে, আমরা ঘুঘুমারীর বাসিন্দাদের সাহসিকতা এবং দৃঢ়তার গল্প শুনেছি। তাদের জন্য আমাদের এই প্রকল্প কতটা রূপান্তরমূলক হয়েছে সেই গল্প শুনতে আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীদের সহায়তা করায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে স্বীকৃতি অর্জন আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করে।”
ফ্রেন্ডশিপ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান বলেন, “রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাডপশন অ্যাওয়ার্ড ফ্রেন্ডশিপ এসপিও (সোশ্যাল পারপাস অর্গানাইজেশন) ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রমাণস্বরূপ, যা নবায়নযোগ্য শক্তির যথাযোগ্য ব্যবহারের চিত্র সকলের সামনে তুলে ধরেছে। এটি ব্যবসায়িক কর্মকান্ড বৃদ্ধি, তথা জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদী সমাধান প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। টেকসই ও উন্নয়নমূলক কাজে অংশীদারিত্ব কীভাবে সফলতা বয়ে আনতে সক্ষম, এই যৌথ সোলার ভিলেজ প্রকল্পে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের ভূমিকা ও প্রতিশ্রুতি তারই একটি প্রমাণ।”
বিশ্বের সর্বাধিক জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে চর অন্যতম। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ চরাঞ্চলের মানুষদের সহযোগিতায় তাদের মূল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সাহায্য করছে; বিশুদ্ধ পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত, পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ, গাছপালা থেকে প্রয়োজনীয় ছায়া, মাটির ক্ষয় রোধ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত ইত্যাদি। ঘুঘুমারীর চর জনগোষ্ঠীকে টেকসই সহায়তা প্রদান করা উদ্দেশ্য ফ্রেন্ডশিপের সাথে ব্যাংকের এই সোলার ভিলেজ প্রকল্পের লক্ষ্য
দেশের দীর্ঘমেয়াদী অংশীদার হিসাবে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিস্থাপকতার অনুপ্রেরণামূলক গল্পের সাথে যুক্ত হয়েছে। ১১৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে, ব্যাংক এই দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য, বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তি প্রচারের জন্য পরিষেবা প্রসারিত করা এবং স্টেকহোল্ডারদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করার জন্য নিবেদিত রয়েছে। বিগত বছরগুলোয় সামাজিক কল্যাণে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সম্পৃক্ততা ও টেকসই উদ্যোগগুলো অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের দিকে ফোকাস করেছে, বিশেষ করে; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থিক শিক্ষা, কৃষি উদ্ভাবনে সমর্থন, খেলাধুলা, শিল্পকলা, সাংস্কৃতিক প্রচার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই ইত্যাদি। বাংলাদেশের সমৃদ্ধির যাত্রায় বিশেষ অবদান রাখার ফলস্বরুপ ২০২৩ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড সকল খাত মিলিয়ে ৩০টি সম্মানসূচক পুরষ্কার অর্জন করেছে।
ফ্রেন্ডশীপ একটি আন্তর্জাতিক সমাজ-কল্যাণমূলক সংস্থা। গত ২০ বছর যাবত ফ্রেন্ডশীপ দেশজুড়ে প্রত্যন্ত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণে সহায়তা করছে। প্রতিটি প্রকল্পের মাধ্যমে সংস্থাটি তাদের চারটি প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে থাকে; জীবন বাঁচানো, দারিদ্র্য বিমোচন, জলবায়ু অভিযোজন এবং ক্ষমতায়ন।
ইএসজিবিজনেস অ্যাওয়ার্ডস টেকসই ভবিষ্যত বিনির্মাণে নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বীকৃতি প্রদান করে। এটি ইনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল ও গভর্ন্যান্স (ইএসজি) সেক্টরে ধারাবাহিকভাবে ভূমিকা পালনকারী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে থাকে।