শেয়ার বাজার

দূষণের কারণে কীভাবে কমে যাচ্ছে পুরুষদের শুক্রাণুর মান

দূষণের কারণে কীভাবে কমে যাচ্ছে পুরুষদের শুক্রাণুর মান
লাইফস্টাইল

সারা বিশ্বেই পুরুষদের বীর্যে শুক্রাণুর মান কমে যাচ্ছে। কিন্তু দম্পতিদের সন্তান না হবার পেছনে এটি এমন একটি কারণ - যা নিয়ে আলোচনা হয় খুবই কম। তবে পুরুষদের এ সমস্যা ঠিক কেন হয় – তা এখন বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করতে শুরু করেছেন।

“আপনার সমস্যাটা সমাধান করা যাবে। চিন্তা করবেন না, আপনাকে আমরা সাহায্য করতে পারবো” – জেনিফার হ্যানিংটনকে বললেন ডাক্তার। “কিন্তু আপনি” – জেনিফারের স্বামী কিয়ারানের দিকে ফিরে বললেন তিনি –“আপনার জন্য আমরা খুব বেশি কিছু করতে পারবো না।“

ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের বাসিন্দা এই দম্পতি দু বছরের বেশি সময় ধরে সন্তান নেবার চেষ্টা করছেন।

তারা জানতেন, এটা কঠিন হবে কারণ জেনিফারের ‘পলিসিস্টিক ওভেরিয়ান সিনড্রোম’ নামে একটি সমস্যা আছে যা তার উর্বরতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

কিন্তু তারা যার জন্য তৈরি ছিলেন না তা হলো – কিয়ারানেরও একটি সমস্যা আছে।

পরীক্ষায় দেখা গেল, কিয়ারানের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কম, এবং যা আছে সেগুলোরও নড়াচড়া করার ক্ষমতা কম।

আরো খারাপ খবর হলো, এর চিকিৎসা করা জেনিফারের সমস্যাটার চাইতেও কঠিন , হয়তো অসম্ভব।

হ্যানিংটনের এখনো মনে আছে একথা শোনার পর তার স্বামীর প্রতিক্রিয়ার কথা।

“সে স্তম্ভিত, শোকাহত হয়ে পড়লো। আমি কিছুতেই ব্যাপারটা মানতে পারছিলাম না। আমার মনে হচ্ছিল, ডাক্তারই ভুল করেছে।“

মানসিক বিপর্যয়

কিয়ারান সবসময়ই চাইতেন সন্তানের পিতা হতে। “আমার মনে হলো আমিই আমার স্ত্রীকে ডুবিয়েছি“ – বললেন তিনি।

পরের কয়েক বছরে কিয়ারানের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হতে লাগলো। তিনি একা একা অনেক বেশি সময় কাটাতে শুরু করলেন।

তিনি বিছানায় শুয়ে থাকতেন। শান্তি খুঁজতে শুরু করলেন এ্যালকোহলের মধ্যে।

তার পর একসময় শুরু হলো ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হওয়া – যার লক্ষণ হঠাৎ শরীর কাঁপতে থাকা, বুক ধড়ফড় করা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ঘাম হওয়া, মাথা ঘোরানো ।

“সেটা ছিল এক গভীর সংকটকাল, মনে হলো আমি যেন একটা অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি” বলছিলেন কিয়ারান।

পুরুষের অনুর্বরতা নিয়ে কেউ কথা বলতে চান না

দম্পতিদের সন্তান না হওয়ার যত ঘটনা ঘটে – তার প্রায় অর্ধেকই ঘটে পুরুষের অনুর্বরতার কারণে।

কিন্তু নারীদের অনুর্বরতা নিয়ে যত আলোচনা হয়, তার তুলনায় পুরুষদের অনুর্বরতা নিয়ে আলোচনা হয় খুবই কম।

এর একটা কারণ হলো এ সমস্যাটিকে ঘিরে নানারকম সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রশ্ন আছে – যেন এটা নিয়ে কথা বলাই বারণ।

যেসব পুরুষদের উর্বরতার সমস্যা আছে তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রেই এর কারণ কি তার কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।

তার ওপর যেহেতু পুরুষদের অনুর্বরতা নিয়ে সমাজে নেতিবাচক ধারণা আছে, তাই অনেককে এ জন্য এক নিরব মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে হয়।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে এ সমস্যা সম্ভবত বাড়ছে।

এতে দেখা যায়, দূষণসহ বিভিন্ন কারণ পুরুষের উর্বরতার ওপর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় বীর্যে শুক্রাণুর মানের ওপর ।

স্বভাবতই ব্যক্তি স্তরে এবং পুরো সমাজের জন্যই এর পরিণাম অত্যন্ত ব্যাপক।

এক গোপন 'উর্বরতা সংকট?'

গত এক শতাব্দীতে সারা বিশ্বে জনসংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।

মাত্র ৭০ বছর আগেও পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ২৫০ কোটি। কিন্তু ২০২২ সালে পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮০০ কোটি।

তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখন কমে আসছে – যার পেছনে প্রধান কারণগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক।

সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু জন্মের হার রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে। পৃথিবীর ৫০ শতাংশ মানুষই এখন এমন দেশগুলোতে বাস করে যেখানে উর্বরতার হার নারীপ্রতি দুটি শিশুরও নিচে। এর ফলে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই এক সময় কমে আসবে – যদি অভিবাসন না হয়।

জন্মহার কমার কিছু কারণ আছে যা ইতিবাচক। যেমন নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ এখন অনেক বেড়েছে।

অন্যদিকে, নিম্ন উর্বরতার হারের কিছু দেশ আছে যেগুলোতে অনেক দম্পতিই তাদের যতগুলো সন্তান আছে তার চেয়ে বেশি নিতে চান- কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে পারেন না।

এরই পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে আরো কতগুলো কারণ। একজন ব্যক্তির সন্তান জন্মদানের শারীরিক সক্ষমতাকে বলা হয় ফিকান্ডিটি – যাকে বলা যায়, উর্বরতাকে একটা ভিন্ন মাপকাঠিতে দেখা। এখন, মনে করা হচ্ছে যে এই ফিকান্ডিটির হার বর্তমানে হয়তো কমে যাচ্ছে।

কিছু গবেষণায় আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে প্রজনন-সংক্রান্ত সমস্যার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।

এর মধ্যে আছে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া, দেহে টেস্টোস্টেরন নামে হর্মোনের মাত্রা কমে যাওয়া, পুরুষাঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়া, এবং অন্ডকোষের ক্যান্সার।

সাঁতার-কাটা দেহকোষ

“শুক্রাণু একটি চমকপ্রদ দেহকোষ” – বলছিলেন ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ সারাহ মার্টিন ডা সিলভা – “তারা অতি ক্ষুদ্র, কিন্তু তারা সাঁতরাতে পারে, তারা শরীরের বাইরে বেঁচে থাকতে পারে। আর কোন দেহকোষেরই এ ক্ষমতা নেই, তারা অনন্য সব বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।“

এখন মনে করা হচ্ছে - খুব সামান্য কিছু পরিবর্তনও এই অনন্য বৈশিষ্ট্যধারী কোষগুলোর ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে জোরালো প্রভাব পড়তে পারে তাদের ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার ক্ষমতার ওপর। “

উর্বরতার জন্য যে জিনিসটি বিশেষ জরুরি তা হলো শুক্রাণুর সচলতা, তাদের আকার ও আকৃতি, এবং একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বীর্যের মধ্যে তাদের সংখ্যা কত – যাকে বলে ‘স্পার্ম কাউন্ট।‘

পুরুষদের উর্বরতা পরীক্ষার সময় এগুলো যাচাই করে দেখা সম্ভব।

“সাধারণত প্রতি মিলিলিটার বীর্যের মধ্যে শুক্রাণুর সংখ্যা যদি চার কোটির কম থাকে – তখনই উর্বরতার সমস্যা দেখা যেতে থাকে” – বলছিলেন হাজাই লেভিন, যিনি জেরুসালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

তিনি ব্যাখ্যা করছেন যে স্পার্ম কাউন্টের সাথে উর্বরতার সম্ভাবনার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।

স্পার্ম কাউন্ট বেশি হলেই যে গর্ভধারণ হবার সম্ভাবনা বেশি হবে তা বলা যায় না – কিন্তু শুক্রাণুর সংখ্যা মিলিলিটারপ্রতি ৪০ মিলিয়নের নিচে নেমে গেলেই গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেক খানি কমে যায়।

অধ্যাপক লেভিন এবং তার সহযোগীরা ২০২২ সালে পৃথিবীব্যাপি স্পার্ম কাউন্টের নিম্নমুখী প্রবণতা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন।

এতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে স্পার্ম কাউন্ট গড়ে ১.২% কমে গিয়ে মিলিলিটারপ্রতি ১০৪ থেকে ৪৯-এ নেমে এসেছে।

এর মধ্যে ২০০০ সাল থেকে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার হার বেড়ে বছর প্রতি ২.৬%এ উঠেছে।

লেভিন যুক্তি দিচ্ছেন যে এই অধোগতির সাথে হয়তো ‘এপিজেনেটিক্স’ বা মানব জিন যেভাবে কাজ করে তার সম্পর্ক থাকতে পারে – যা সম্ভবত পরিবেশগত বা জীবনযাপন-সংক্রান্ত বিভিন্ন কারণে ঘটছে।

অন্য আরেকটি গবেষণাতেও আভাস পাওয়া গেছে যে শুক্রাণুতে পরিবর্তন বা পুরুষের অনুর্বরতার পেছনে এপিজেনেটিক্সের ভূমিকা থাকতে পারে।

“এতে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে হয়তো এ সমস্যা এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে পরিবাহিত হচ্ছে” – বলেন লেভিন।

সবাই এ তত্ত্বের সাথে একমত নন

এই এপিজেনেটিক পরিবর্তনের তত্ত্ব অবশ্য বিতর্কও সৃষ্টি করেছে এবং সবাই এর সাথে একমত নন।

তবে এমন তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে যাতে মনে হয়, এটা হলেও হতে পারে।

“এ ব্যাপারটা (শুক্রাণুর সংখ্যা কমতে থাকা) হচ্ছে পুরুষদের নিম্নগামী স্বাস্থ্যের একটা চিহ্ন – হয়তো গোটা মানবজাতির ক্ষেত্রেই তা ঘটছে” – বলছেন লেভিন – “হয়তো আমরা একটা জনস্বাস্থ্য সংকটের সম্মুখীন, যা ঠেকানো সম্ভব কিনা তা আমরা এখনো জানি না।“

গবেষণা থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে মানুষের জীবনযাপনের কিছু উপাদান হয়তো অনুর্বরতা এবং অন্য আরো কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার পেছনে ভূমিকা রাখছে।

এমনও হতে পারে যে শুক্রাণুর মানের এ অবনতি হয়তো ব্যক্তিগতভাবে জীবনযাপনে পরিবর্তন এনেও ঠেকানো সম্ভব নয়।

গবেষণা থেকে ক্রমশই এমন আরো বেশি প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে এক্ষেত্রে একটি ব্যাপকতর পরিবেশগত হুমকি রয়েছে, আর তা হলো – দূষণ সৃষ্টিকারী নানা ক্ষতিকর পদার্থ।

দূষণ ঘটাচ্ছে প্লাস্টিক এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ

মানুষের ঘরের ভেতরে ব্যবহৃত হয় এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলছে – তা নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেবেকা ব্ল্যানচার্ড ।

এই প্রভাব বোঝার জন্য তিনি কাজে লাগাচ্ছেন গৃহপালিত কুকুরকে। কারণ, গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে সেই কুকুর একই বাড়িতে থাকছে এবং একই দূষণকারী রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসছে।

রেবেকা গবেষণা করছেন প্লাস্টিক, আগুনরোধী রাসায়নিক, এবং ঘরের অন্যান্য নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী নিয়ে।

এসব রাসায়নিক পদার্থের কিছু কিছু নিষিদ্ধ, কিন্তু পরিবেশে এবং পুরোনো জিনিসপত্রের মধ্যে তার অবশেষ রয়ে গেছে।

তার গবেষণায় দেখা গেছে, এসব রাসায়নিক পদার্থ আমাদের হর্মোন সিস্টেমকে বিঘ্নিত করতে পারে এবং মানুষ ও কুকুর উভয়ের ক্ষেত্রেই উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে।

রেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন, “আমরা মানুষ এবং কুকুর উভয়েরই শুক্রাণুর নড়াচড়ার ক্ষমতা কমে যাওয়ার তথ্য পেয়েছি । তা ছাড়া তার ডিএনএ ভেঙে যাওয়ার পরিমাণও বেড়ে যেতে দেখেছি।“

ডিএনএ ভেঙে যাওয়া বলতে তিনি বোঝাচ্ছেন, যেসব জিনগত সামগ্রী দিয়ে শুক্রাণু তৈরি - তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা ভেঙে যাওয়া।

এর ফলে গর্ভধারণের পরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন, ডিএনএ ভেঙে যাওয়ার পরিমাণ যদি বেড়ে যায় তাহলে গর্ভধারণের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে ‘মিসক্যারেজ’ বা ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনাও বেড়ে যায়।

তার এই তথ্যের সাথে অন্যান্য গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের মিল আছে। ওই গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে যে প্লাস্টিক, সাধারণ নানা ওষুধ, খাদ্য এবং বাতাসে উপস্থিত রাসায়নিক পদার্থ উর্বরতার ক্ষতি ঘটাতে পারে।

এগুলো শুধু পুরুষ নয়, নারী ও শিশুদের দেহেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

কার্বন এবং কখনোই নষ্ট হয় না এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থের অস্তিত্ব এমনকি গর্ভস্থ শিশুর দেহেও পাওয়া গেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনও পুরুষের উর্বরতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বেশ কিছু প্রাণীর ওপর চালানো জরিপে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি বিশেষ করে শুক্রাণুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

দেখা গিয়েছে যে তাপপ্রবাহ কীটপতঙ্গ ও মানুষের শুক্রাণুর ক্ষতি করে।

২০২২ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে গরম পরিবেশে বা উচ্চ তাপমাত্রায় কাজ করলে শুক্রাণুর মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

নিম্নমানের খাদ্য, মানসিক চাপ ও এ্যালকোহল

পরিবেশগত নানা কারণের পাশপাশি ব্যক্তিগত নানা সমস্যাও পুরুষদের উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে। যেমন - নিম্নমানের খাদ্য, দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয় এমন জীবনযাপন, মানসিক চাপ, এ্যালকোহল পান এবং মাদক ব্যবহার ।

বর্তমানে অনেক দম্পতিই অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সে সন্তানের পিতামাতা হচ্ছেন।

তবে নারীদেরকে তাদের “জীবনের সবচেয়ে উর্বর সময়কাল“ বা “বায়োলজিকাল ক্লকের” কথা যতটা মনে করিযে দেয়া হয়, তার বিপরীতে ‘পুরুষদের উর্বরতার ক্ষেত্রে বয়স কোন ব্যাপার নয়’ - এমনটাই আগে মনে করা হতো।

কিন্তু সেই ধারণার এখন পরিবর্তন হচ্ছে।

বেশি বয়সে পিতামাতা হবার ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা এবং উর্বরতা কমে যাবার সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে।

এখন বলা হচ্ছে যে পুরুষদের অনুর্বরতাকে আরো ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং এ সমস্যা নিরুপণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গী দরকার।

একই সাথে দূষণ রোধের জরুরি প্রয়োজনের ব্যাপারে সচেতন হতেও বলা হচ্ছে।

প্রশ্ন হলো, শুক্রাণুর মান বৃদ্ধির জন্য পুরুষরা ব্যক্তিগতভাবে কী কী করতে পারেন?

রেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং ব্যায়াম দিয়ে শুরু করাটা ভালো, কারণ এর সাথে শুক্রাণুর মান উন্নত হবার সম্পর্ক দেখা গেছে।

তিনি আরো বলছেন অরগ্যানিক খাবার খাওয়া এবং বাইফেনল-এ বা বিপিএ-বিহীন প্লাস্টিক ব্যবহার করার কথা। এই বিপিএর সাথে নারী ও পুরুষ উভয়েরই অনুর্বরতার সম্পর্ক আছে।

“এরকম ছোট ছোট কিছু পন্থা আপনি নিতে পারেন” – বলছেন রেবেকা ব্ল্যানচার্ড।

হ্যানিংটন দম্পতি শেষ পর্যন্ত আইভিএফ পদ্ধতিতে দুটি সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন।

“আমি প্রতিদিনই আমার সন্তান দুটির জন্য কৃতজ্ঞতা বোধ করি” বলছেন কিয়ারান হ্যানিংটন - “কিন্তু অতীত দিনগুলোর কথা আমি ভুলিনি, কখনোই তা সম্ভব নয়।“