সিসিএন ডেস্ক : ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহাপরিচালক সাইয়েদ রসুলে মুসাভি দু'দেশের রাষ্ট্রদূতের কাজে ফেরার পর পাক-ইরান বন্ধুত্ব জোরদারে গণমাধ্যমের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন: দু'দেশেরই জনগণ ও কর্মকর্তারা সম্পর্ক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
পাকিস্তানে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর ইরানের বেশ কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। পাকিস্তান বলেছে ওই সীমান্ত পয়েন্টগুলো ছিল পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের আখড়া। হামলা পাল্টা হামলার ঘটনায় দু'দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ওপর ধোঁয়াশার ছায়া পড়ে। তবে গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম দেশদুটোর কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে উত্তেজনা বৃদ্ধি ঠেকানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামাবাদ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উত্তেজনা কমাতে তেহরানের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দেয়। এছাড়াও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানকে আগামিকাল সোমবার ২৯ জানুয়ারী পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানায়।
দু'দেশের মধ্যকার উত্তেজনা নিরসনে কার্যকর তৎপরতা সত্ত্বেও যে বিষয়টি গুরুত্বের দাবি রাখে তা হলো সীমান্ত সন্ত্রাস দমনে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা এবং নিরাপত্তা চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়া একান্ত প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সঙ্গে যতবারই ইরানের সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে তার কারণ ছিল পাকিস্তান ভূখণ্ডে সন্ত্রাসীদের অবস্থান এবং সেখান থেকে ইরানে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার ঘটনা।
এ কারণেই ইরান বারবার পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সন্ত্রাসী ঘাঁটি এবং বিদেশি মদদে তাদের তৎপরতার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জবাবে পাকিস্তানও ওই উদ্বেগ নিরসনে দু'দেশের মধ্যকার সামরিক ও নিরাপত্তা চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে আন্তরিকতার ওপর জোর দিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি ইরানের সঙ্গে তার দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন: ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন্ন ইসলামাবাদ সফর বন্ধুপ্রতিম দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। পাকিস্তানি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ ব্যাপারে লিখেছে: সাম্প্রতিক ঘটনার পর পাকিস্তান ইরানের সঙ্গে নতুন উদ্যমে কাজ করে যেতে বদ্ধপরিকর। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারেও ইরানের সঙ্গে নতুন করে কাজ করে যেতে ইচ্ছুক ইসলামাবাদ। সুতরাং দু'দেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল।