সিসিএন ডেস্ক : চীনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক (আইসিবিসি) একটি র্যানসমওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যিক লেনদেন হয়ে থাকে। এতে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন ট্রেজারি মার্কেটে লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
আইসিবিসি ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাণিজ্য এবং অন্যান্য পরিষেবা পরিচালনা করে। সম্পদের ভিত্তিতে ব্যাংকটি চীনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ঋণদাতা মার্কিন ইউনিট।
গতকাল শুক্রবার (১০ নভেম্বর) তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি সপ্তাহে র্যানসমওয়্যার হামলায় তাদের কিছু সিস্টেম বিঘ্নিত হলেও হামলার প্রভাব সীমিত করতে ক্ষতিগ্রস্ত সিস্টেমের কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার তদন্ত ও সিস্টেম পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় অগ্রগতি করছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, প্রতিষ্ঠানটি হামলার পরে ঝুঁকির এবং ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছে।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, আইসিবিসি বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া ও তদারকি যোগাযোগের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম চেষ্টা করেছে। আইসিবিসির প্রধান কার্যালয় এবং বিশ্বজুড়ে অন্যান্য শাখা এবং সহায়ক সংস্থাগুলোতে ব্যবসা স্বাভাবিক রয়েছে।
হ্যাকাররা র্যানসমওয়্যার আক্রমণের সময় সিস্টেম লক করে এবং এটি আনলক করার জন্য অর্থ দাবি করে। প্রায়ই চাঁদাবাজির জন্য সংবেদনশীল ডেটা চুরি করে নিজেদের কাছে রেখে দেয় হ্যাকাররা।
বেশ কিছু র্যানসমওয়্যার বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্লেষক বলেছেন, লকবিট নামে একটি সাইবার ক্রাইম গ্যাং এ আক্রমণ চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও গ্যাংটির ডার্ক ওয়েবসাইটে এখন পর্যন্ত আইসিবিসি হ্যাকের কোনো পোস্ট দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে লকবিট অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি রেকর্ডেড ফিউচারের র্যানসমওয়্যার বিশেষজ্ঞ অ্যালান লিস্কা বলেন, এত বড় কোনো ব্যাংকে এমন র্যানসমওয়্যার আক্রমণের ঘটনা বিরল।
এ হ্যাকিংয়ের পেছনে লকবিট রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন লিস্কা। তিনি বলেছেন. র্যানসমওয়্যার গ্যাংরা ভুক্তভুগির সঙ্গে আলোচনার সময় নিজেদের শিকারের নাম প্রকাশ করে না। র্যানসমওয়্যার গ্রুপগুলোর উৎপাত বাড়ছে, এই আক্রমণ তারই অংশ। এসব গ্রুপের টার্গেটের কোনো সীমা নেই।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে বেশ লড়াই করছে। এসবের মধ্যে রয়েছে প্রধানত র্যানসমওয়্যার আক্রমণ, যা প্রতিবছর প্রায় প্রতিটি শিল্পে শত শত কোম্পানির ওপর হামলা করে। শুধু গত সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ধরনের র্যানসমওয়্যার গ্যাংগুলোর অর্থায়নের রুটগুলো কমাতে তাঁরা ৪০ দেশের জোট জুড়ে তথ্য আদান-প্রদান করছেন।
লকবিট হ্যাক করার পেছনে ছিল কি না, সে বিষয়ে আইসিবিসি মন্তব্য করেনি। সাইবার ক্রাইম গ্যাংগুলোর নাম প্রকাশ্যে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকাটাই স্বাভাবিক।
২০২০ সালে লকবিটের উত্থান হওয়ার পর থেকে ইউএস সাইবারসিকিউরিটি এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি অনুসারে, গ্রুপটি ১ হাজার ৭০০ মার্কিন সংস্থাকে আঘাত করেছে। গত মাসে এটি বোয়িংকে সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসের হুমকি দিয়েছিল।