সিসিএন ডেস্ক : কোনো ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। এই বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল, ২০২৩’ পাস করা হয়েছে।
বুধবার (১ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে বিলটি পাস হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে চলা অধিবেশনে কণ্ঠভোটে এটি পাস হয়।
বিল উত্থাপনকালে আইনমন্ত্রী বলেন, অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনাকারী ফাইন্যান্স কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, লাইসেন্স প্রদান, ব্যবস্থাপনা, নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা, আর্থিক কাঠামো সুসংগঠিতকরণ এবং সময়ের চাহিদা পূরণকল্পে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ রহিত করে যুগোপযোগী করতে পুনঃপ্রণয়ন করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রদত্ত বা প্রদেয় মোট ঋণ সুবিধার আসলের পরিমাণ ওই ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত হারের বেশি হবে না। তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত হারের সীমা কোনো অবস্থাতেই শতকরা ৩০ ভাগের বেশি হবে না। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ার জামানত রেখে কোনো ব্যক্তিকে ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বেনামি বা অস্তিত্বহীন বা নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না।
এছাড়া কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনো ব্যক্তিকে ১০ লাখ টাকা অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত পরিমাণের বেশি ঋণ প্রদান করবে না বলেও বিলে দেখানো হয়। এ সময় আরো বলা হয়, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বিনা জামানতের কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের সদস্য ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা নিতে পারবে না
এসব শর্ত লঙ্ঘন করে কোনো পরিচালক বা কর্মকর্তা উক্ত সুবিধা-প্রদান করলে, এটি অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের জন্য ওই ব্যক্তি অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির বর্তমান বা সাবেক পরিচালক ও তার পরিবার বা অন্য কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা ফাইন্যান্স কোম্পানির বর্তমান বা সাকেব পরিচালক ও তার পরিবারের গৃহীত ঋণের ওপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ বা মুনাফা মওকুফ করলে অথবা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত কোনো ব্যক্তির ওপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ বা মুনাফা মওকুফ করলে, এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বিলে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স ছাড়া অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করছে বা কোনো সময় করেছিল বা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি তদন্ত করতে পারবে। তবে লাইসেন্সবিহীন অর্থায়ন ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তি তদন্তকাজে অসহযোগিতা করলে, ওই ব্যক্তি অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাব বই, হিসাব প্রতিবেদন, কোনো বিবরণী, ব্যবসা সংক্রান্ত কাগজ বা অন্যান্য দলিলে মিথ্যা কিছু সংযোজন করলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক ৩ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।