ইউজিসি গত ৭ জুন ২০২৩ অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল প্রেরণ করেছে যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রস্তাবিত এই নীতিমালা আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে সরকার ও শিক্ষক সম্প্রদায়কে পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থানে দাঁড় করানোর অপতৎপরতা হিসেবে প্রতীয়মান হয়। মুদ্রাস্ফীতির সাথে জীবনযাত্রার মানের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে সবাই যখন বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য অধীর আগ্রহে দিন গুনছে, তখনই আর্থিক সুবিধা আরো কর্তন করে এহেন অনুপযোগী ও শিক্ষক স্বার্থবিরোধী অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা পাস করে ইউজিসি শিক্ষক সমাজের সাথে বিদ্রুপাত্মক আচরণ করেছে। আমরা অত্যন্ত আশ্চর্য হয়েছি যে, শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের রাখা হয়নি যা অনভিপ্রেত।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্ত্বশাসন দিয়ে এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার একটি যুগান্তকারী শুভসূচনা করেছিলেন। কিন্তু বেশকিছু দিন ধরে ইউজিসির আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্ত্বশাসন ধারণার সাথে অসংগতিপূর্ণ।
জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে যখন বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরবর্তী অস্থিতিশীল বিশে^ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে, ঠিক এই সময়ে এ ধরণের অনুপযোগী ও অযৌক্তিক নীতিমালা কোনভাবেই কাম্য নয়। বিষয়টি জাতীয় নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করে তোলার কোন ষড়যন্ত্র কিনা তা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন গভীরভাবে খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।
ইতোমধ্যে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই অগ্রহণযোগ্য নীতিমালার ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। শিক্ষার পরিবেশ সাবলীল রাখতে শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিধায়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন সর্বসম্মতিক্রমে এই নীতিমালা প্রত্যাখান করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বদ্ধপরিকর। শিক্ষকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে আগামী ৯ জুলাই, ২০২৩ এর মধ্যে এই বিতর্কিত অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল বাতিল করার জন্য ইউজিসিকে আহবান জানাচ্ছি, অন্যথায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এর নেতৃত্বে সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ একযোগে ইউজিসির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হবে।
