বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের বাজেট মূলত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বাজেট। ২০০৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। যেমন কৃষির আকার বেড়েছে ৪ গুন, রপ্তানি বেড়েছে ৫ গুন, রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬ গুণ। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাজেট কোনোভাবেই উচ্চাভিলাষী নয় বরং ভবিষ্যৎমুখী। বর্তমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এই বাজেট অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সমৃদ্ধ ও সুষম বাজেট নির্মাণ: বাজেট ২০২৩-২০২৪’ শীর্ষক সেমিনারে ড. আতিউর রহমান এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষণাভিত্তিক সংগঠন ‘এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)’ এ সেমিনারের আয়োজন করে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও ইআরডিএফবির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার।
ড. আতিউর রহমান বলেন, কোভিডের মত কঠিন পরিস্থিতিতে ও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১৯৭১ এ যা ছিল তা থেকে প্রায় ৩০ গুণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৮০০ মার্কিন ডলার। বর্তমান সরকারের সফল বাজেটের ফলে দারিদ্রতা এবং অতি দারিদ্রতা কমে হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ এবং ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বর্তমানে বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় অনেক বেশি জোর দেওয়া হয়েছে যা মূলত সরকারের উৎসাহের ফলেই হয়েছে। তাই সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে এই বাজেট স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা পালন করবে বলেও মনে করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, বাজেট ঘোষণা করলেই হবে না বরং বাজেটের যথাযথ ব্যবহার আমাদের করতে হবে। বাংলাদেশের সকল সেক্টরে প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর জোর দিয়ে বর্তমান বাজেট মূলত স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি প্রত্যাশা করছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, ৯ মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে অর্জিত এই সোনার বাংলায় বর্তমান সরকারের ঘোষিত বাজেট বাংলাদেশের ময়লা এবং ছেঁড়া লুঙ্গি পরা প্রান্তিক মানুষগুলোর কথা চিন্তা করা হয়েছে। এই বাজেট নিঃসন্দেহে তাদের কল্যাণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, স্মার্ট, সমৃদ্ধ এবং সুষম বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ সমাজকে কাজে লাগাতে হবে। আর বর্তমান বাজেটের যে ছোট কিছু জায়গাগুলোতে পরিবর্তন আনলে তা আরও বেশি যুক্তিযুক্ত হবে তাতে সরকারকে পুনর্বিবেচনার জন্য আহবান জানাই।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইআরডিএফবি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান।