সিসিএন ডেস্ক : বাংলাদেশের শিল্পখাতের প্রস্তুতি, দীর্ঘময়োদী টেকসই বিনিয়োগবান্ধব নীতি সহায়তা, সহায়ক কর কাঠামো, বর্হিবিশ^ ইতিবাচক ভাবমূর্তির উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে দক্ষ মানবম্পদ, রপ্তানির সক্ষমতা ও পণ্যের বহুমুখীকরণ প্রভৃতি বিষয় সমূহ ইইউ বিনিয়োগ আকর্ষনে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে ভ‚মিকা পালন করবে বলে মত প্রকাশ করেন, ডিসিসিআই-ইইউ আয়োজিত সেমিনারের বক্তারা।
উল্লেখ্য, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “বাংলাদেশে পরিচালিত ইউরোপীয়ান কোম্পানীগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ” শীর্ষক সেমিনার অদ্য ০৪ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া উক্ত অনুষ্ঠানে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তার বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সহযোগী হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যেখানে ২০২৩ অর্থবছরে আমাদের মোট রপ্তানির প্রায় ৪৮শতাংশের গন্তব্য হলো ইইউভুক্ত দেশসমূহ, যার পরিমাণ ২৫.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি জানান, ইইউ-এর বেশকিছু কোম্পানী বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৩.৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে, যা আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিল্পখাতে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ আনায়ন, সাপ্লাইচেইন শক্তিশালীকরণ সহ সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি উল্লেখ করেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের পর ইইউ-এর বাজারে পণ্য রপ্তানিতে আমরা বিদ্যমান শুল্ক সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবো, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ও স্থানীয় শিল্পায়নকে ব্যাহত করবে, এমন বাস্তবতায় আমাদের পণ্যে রপ্তানির শুল্কমুক্ত সুবিধা ২০২৯ পর্যন্ত অব্যহাত রাখা জরুরী। একই সাথে বাংলাদেশ হতে তৈরি পোষাকের পাশাপাশি পাদুকা, হিমায়িত খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, মেশিনারিজ, কেমিক্যাল প্রভৃতি আরো বেশি হরে আমাদানির জন্য ইইউ-এর উদ্যোক্তাদের প্রতি আহŸান জানান ব্যারিস্টার সাত্তার। তিনি আরো বলেন, ইইউ বাংলাদেশের জন্য শুধুমাত্র রপ্তানির গন্তব্যই নয়, একটি নির্ভরযোগ্য ব্যবসায়িক উন্নয়ন সহযোগী। ডিসিসিআই সভাপতি আশা করেন, বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর বিদ্যমান রপ্তানি সুবিধা রাখতে চলমান জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশনের প্রধান রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলি বলেন, বহুবছর ধরেই ইইউভুক্ত দেশসমূহ বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির একটি আদর্শ গন্তব্যস্থল এবং ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগটি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে ইইউ’র সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ^স্ত করেন, ইইউ রাষ্ট্রদূত। তথ্য-প্রযুক্তি, এভিয়েশন, নবায়নযোগ্য জ¦ালানি, কৃষি, ঔষধ প্রভৃতি খাতে ইইউ কোম্পানীসমূহের বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে, তিনি মত প্রকশ করেন। এছাড়াও বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে আরো বেশি হারে বাণিজ্য ও বিনিযোগ কার্যক্রম সম্প্রসারণের উপর রাষ্টদূত জোরারোপ করেন।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের বিনিয়োগে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এবং রানা প্লাজার ঘটানার পর আমাদের তৈরি পোষাকখাতে নতুন সম্ভাবনার তৈরি করেছে, যেখানে ইইউ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেটাকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সকলের সহযোগিতায় মোকাবেলা করতে হবে। বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো এদেশে পরিচালিত ইইউ কোম্পানীগুলোকে আরো বেশি হারে এ্যাডভোকেসি করার আহŸান জানান বাণিজ্য মন্ত্রী।
বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সকল ধরনের সেবা নিশ্চিতকরতে বিডা বদ্ধপরিকর এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরে বিডার ‘ওএসএস’ প্ল্যাটফর্ম হতে বিনিয়োগকারীদের জন্য সকল ধরনের সেবা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে। তিনি জানান, আমাদের স্থানীয় বাজারের পরিমাণও বেশ বড়, যেখানে ইইউ কোম্পানীসমূহ বিনিয়োগে