শেয়ার বাজার

ব্যবসা পৃথকীকরণে আদালতের অনুমোদন পেলো লিন্ডে বাংলাদেশ

ব্যবসা পৃথকীকরণে আদালতের অনুমোদন পেলো লিন্ডে বাংলাদেশ
পুঁজিবাজার

সিসিএন ডেস্ক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড ব্যবসা পৃথকীকরণ প্রক্রিয়ায় হাইকোর্টের অনুমোদন পেয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যানুসারে, গত এপ্রিলে নিজেদের ব্যবসা পৃথকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্যাস ও হার্ড গুডস ব্যবসা পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল কোম্পানিটি। ফলে গত ১৪ আগস্ট ব্যবসা পৃথকীকরণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে হাইকোর্ট রায় দিয়েছে।পৃথকীকরণের পর লিন্ডে বাংলাদেশের হার্ড গুডস ব্যবসা এবং এ-সংক্রান্ত সম্পদ ও দায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শতভাগ মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারি  লিন্ডে ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডের কাছে স্থানান্তরিত হবে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে বিশেষ সাধারণ সভার (ইজিএম) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত ‘মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল’-এ পাঁচ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত ‘মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল’-এ কারখানা স্থাপনে এক কোটি ৭০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে লিন্ডে  বাংলাদেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে কোম্পানিটির চুক্তি সই হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে পাঁচ একর জমিতে  অক্সিজেন ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করবে গ্যাস ও ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড।

 ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি ১৯৭৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৫ কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির বর্তমানে মোট এক কোটি ৫২ লাখ ১৮ হাজার ৩০০ শেয়ার রয়েছে। আর কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৫৯১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৬০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯ দশমিক ১০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) কোম্পানিটির আয় হয়েছে ২৩৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, আগের হিসাববছরের একই সময়ে যা ছিল ২৫১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির উৎপাদন ব্যয় হয়েছে ১৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা, আগের হিসাববছরের একই সময়ে যা ছিল ১৪৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ। চলতি হিসাববছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৮ কোটি ২ লাখ টাকা, আগের হিসাববছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৮ টাকা ৪১ পয়সা, আগের হিসাববছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৪ টাকা ৯৫ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৭৩ টাকা ৮৫ পয়সায়।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে লিন্ডে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ১১২ কোটি ৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাববছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ২৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৯ টাকা ১৯ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ১৫ টাকা ৩০ পয়সা।

কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৪২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৮ টাকা ৪ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩৯৭ টাকা ৪৪ পয়সা। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৩৭ টাকা ৩২ পয়সা। এর আগে কোম্পানিটি ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ৫৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮০ টাকা ৫৪ পয়সা ও ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩৯৫ টাকা ৫২ পয়সা। আর ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ৪০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭০ টাকা ৫৪ পয়সা ও ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩৫৫ টাকা ৭১ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১০৭ কোটি ৩৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।