শেয়ার বাজার

শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতেফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দাবি শীর্ষ ব্রোকারদের

শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতেফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দাবি শীর্ষ ব্রোকারদের
পুঁজিবাজার

সিসিএন ডেস্ক : ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর সীমা হলো প্রচলিত বাজারের কোনো পণ্যের সর্বনিম্ন বাজারমূল্য, যার নিচে ওই পণ্য কেনাবেচা করা যায় না।  বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশে শেয়ারদর যখন একেবারে তলানিতে এবং শেয়ারবাজারের সূত্র মতে, বাজারের নিজস্ব শক্তিতে ঘুরে না দাঁড়িয়ে উল্টো আচরণ করে অর্থাৎ সূচক যখন বারবার সূচনালগ্নের অবস্থানে ফিরে যায়। তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিরুপায় হয়ে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে।

ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারে অধিকাংশ শেয়ারদর একই জায়গায় আটকে আছে এবং এসব শেয়ারের ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে এক প্রকার স্থবিরতা বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে। এ অবস্থায় দ্রুত ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্রোকাররা। গতকাল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে বৈঠকে শীর্ষ ব্রোকাররা এ দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (০৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে বৈঠকে শীর্ষ ব্রোকাররা ফ্লোর প্রাইস তোলার এই দাবি জানিয়েছেন।

দেশের শেয়ারবাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার বিষয়টি আলোচনার জন্য শীর্ষ ৩০ ব্রোকারের সঙ্গে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএসইসি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে বুধবার বিকাল ৪টায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ সময় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।

সভাসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারদের সবাই ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার বিষয়ে বিএসইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেউ কেউ অতিদ্রুত এবং কেউ কেউ কিছুটা সময় নিয়ে হলেও ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দাবি জানান। তাদের এ দাবির বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হলে এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হবে।

সভায় বিএসইসি কমিশনার বলেন, ‘পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হিসেবে ব্রোকারদের মতামত আমরা গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করি এবং আমরা চাই আপনারা পুঁজিবাজারের নানা বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ আমাদের জানান। দেশের পুঁজিবাজারের জন্য যা কিছু ভালো হবে, সেটাই বিএসইসির চাওয়া। পুঁজিবাজারের বিষয়ে আজকের সভায় আপনাদের ভাবনাগুলো মাথায় রেখে আমরা কাজ করব। সবদিক বিবেচনায় আগামীতে বাংলোদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থিক অবস্থান আরো ভালো হবে এবং পুঁজিবাজার আরো প্রাণবন্ত হবে বলে আশা করা যায়।’

এছাড়া বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং সে বিষয়ে করণীয় ও আগামীতে বাজারের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, পুঁজিবাজারের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণে বিএসইসি সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করছে। শিগগিরই বাজার ভালো হবে এবং বাজারের উন্নয়নে বিএসইসি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় কাজ করছে।

সভায় লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, রয়েল ক্যাপিটাল লিমিটেড, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড, আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস লিমিটেড, শান্তা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, গ্লোব সিকিউরিটিজ লিমিটেড, শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেড, কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেড, আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এনআরবিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেড, আকিজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ লিমিটেড, বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ লিমিটেড, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এভিআইভিএ ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, বিডি ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজ লিমিটেড, রিলায়েন্স ব্রোকারেজ সার্ভিসেস লিমিটেড, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এমটিবি সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সভার আলোচনায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে এবং বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে দেশের শেয়ারবাজারকে জনপ্রিয় করতে বিএসইসিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ জানান। উপস্থিত ব্রোকারেজ হাউজগুলোর প্রতিনিধিরা দেশের বাজারকে আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে নিজেদের সর্বাত্মক চেষ্টা ও সহযোগিতা থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন।